আন্তর্জাতিক
ভ্লাদিমির পুতিন : কেজিবি(KGB) থেকে ক্রেমলিন

Published
4 years agoon

“অপরাধীদের ক্ষমা করা উপরওয়ালার দায়িত্ব, কিন্তু তাদের উপরওয়ালার কাছে পাঠানো আমার দায়িত্ব”- পুতিন। পুরো নাম ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন।
১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লেলিনগ্রাদে (বর্তমান নাম সেন্ট পিটার্সবার্গ) দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দাদা ছিলেন লেলিন ও স্টালিনের বাবুর্চি। শিক্ষাজীবনে সম্পন্ন করেছেন সেন্ট পিটার্সবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিভাগ থেকে। ১৯৭৬-১৯৯১ সাল পর্যন্ত KGB(committe for state security) তে কর্মরত ছিলেন। পুতিনের রাজনীতিতে আগমন ঘটে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবশালী ও সংস্কারপন্থী নেতা আনাতোলি সোবচাক এর মাধ্যমে। পুতিন KGB প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন।

পদবী ছিলো লেফটেন্যান্ট কর্নেল। ১৯৯১ সালে তিনি রাশিয়ার মন্ত্রীপরিষদ সভাপতি ও একই সাথে বরিস ইয়েলিৎসিন এর পদত্যাগের কারনে ২০০০ সালের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানেও তিনি রাশিয়া ( রাষ্ট্রপতি) শাসন করছেন। রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড রাশিয়ার মাধ্যমে। রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হতে পুতিনের অনেক কন্ঠকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করতে হয়ে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের (১৯৯১) পর এর সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়।

ফলে গুটি কয়েকজন ব্যবসায়ী এ সকল প্রতিষ্ঠান নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এবং অল্প সময়ের মধ্য প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক বনে যান। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন খোদোরকোভস্কি, ইগর সেচিন,গেনাভি টিম, চেনকো, আব্রাহামোভিচ,ইউরি কোডালচুক প্রমুখ। এদেরকে রাশিয়ান অলিগার্কস (Oligarchs) বলা হয়। এরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সরাসরি অংশগ্রহণ না করে পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালিত করত।
বলাবাহুল্য পুতিনের শাসনামলে এসকল অলিগার্কস এর উত্থান ঘটে কিন্তু দূরদর্শিতার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এসকল অলিগার্কস দের শক্ত হাতে দমন করেন। অন্যতম প্রভাবশালী অলিগার্কস খোদারকোভস্কি দীর্ঘ ১০ বছর জেলে বন্দি ছিলেন। অনেককে দেশ থেকে বিতারিত করেছেন। বর্তমানে পুতিনের শক্ত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ’আলেক্সি নাভালনি’ জেলে বন্দি রয়েছেন। এখন পুতিন রাজনৈতিকভাবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বৃহত্তম রাশিয়ার অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ যথা গ্যাস ( বিশ্বের ১ম) ও খনিজ তেলের যথাযথ উত্তোলন ও বিপননের মাধ্যমে পুতিন রাশিয়ার সামগ্রিক অর্থনৈতিক পাল্টে দিয়েছেন।

২০১৮-১৯ সালে রাশিয়ার মাথাপিছু আয় ১২১০০ ডলার যা ২০০০ সালের দিকে ছিলো ৫০০০ ডলার।বর্তমানে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব অর্থনীতিতে জায়গা করে নিয়েছে। যেমন- গ্যাসপ্রম, লোকোইন, রোজনেফট, MTS (Mobile telephone system),টেক জায়ান্ট yandex প্রভৃতি। এসব সম্ভব হয়েছে পুতিনের দুরদর্শী নেতৃত্বগুনে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষকগণ এখন এককথায় স্বীকার করবেন যে বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতির। ঘটনাপ্রবাহে পুতিনের ভূমিকা সর্বাগ্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে। সিরিয়ার বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছেন একমাত্র পুতিন। সকল প্রকার সামরিক ও রাজনৈতিক সুবিধা দিচ্ছেন বাশারকে। ইরান-সিরিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, সিরিয়া- রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য নিজের প্রভাব বলয় বৃদ্ধি করছেন পুতিন। এছাড়া রাশিয়া-ইরান-তুরুস্ক ত্রীপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে ইতিমধ্যে রাশিয়াকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

তুরুস্কের ব্যর্থ অভূত্থানের বিপরীতে এরদোগানের পক্ষাবলম্বন, s-400 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বিক্রির মাধ্যমে রাশিয়া তুরস্ক ঐতিহাসিক সম্পর্কের সূচনা করেছে। উভয় দেশ নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পাদন চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। সাম্প্রতিক কুর্দি মুক্ত সেফ জোন প্রতিষ্ঠায় উভয় দেশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে ।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান সুন্নি রাষ্ট্র সৌদি আরবে ১৪ অক্টোবর পুতিন সৌদি বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। এখানে ২০ টি চুক্তি সই হয়, এছাড়া s-400 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়। দীর্ঘদিনের মার্কিন ও ইসরাইলি ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদির রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে। মধ্যপ্রাচ্য ক্ষমতার রাজনীতির ভারসাম্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে।
পুতিনের ক্ষমতায় আসার পর(২০০-বর্তমান) থেকেই চীনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। সামরিক সহযোগিতার পাশাপাশি চীনের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বেল্ট এ্যান্ড রোড পদক্ষেপ (ও বি ও আর) এর সাথে রাশিয়ার সংযুক্তি পুতিনবিরোধী পশ্চিমাদের মাথাব্যথার মূল কারণ। এছাড়া চীনের টেলিকম জায়ান্ট হুওয়ায়ে ও রাশিয়ান টেক জায়ান্ট ইয়ান্ডডেক্স এর মধ্যকার 5G প্রযুক্তি নিয়ে চুক্তি হয়। এটা পশ্চিমাদের দুশ্চিন্তাই ফেলে দিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তি ভারতের সাথে রাশিয়ার এস-400 ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রয় চুক্তি হয়েছে। যার পরিমাণ 5 বিলিয়ন ডলার। এছাড়া যুদ্ধবিমান su-35 যুদ্ধবিমান ভারতের যৌথ উৎপাদনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার সমাজতান্ত্রিক দেশ ভেনেজুয়েলার গত 30 এপ্রিল মার্কিন সমর্থনপুষ্ট হুয়ান গুয়াইদাদো নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলে সংকট চরম আকার ধারণ করে।
মার্কিন সরকার সেখানে সামরিক অভ্যুত্থানের কথা বললে রাশিয়া সেখানে সৈন্য ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। বর্তমানে সেখানে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। এসবের কৃতিত্বের দাবিদার হচ্ছেন পুতিন।

ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কৃষ্ণসাগরের নিকটবর্তী ক্রিমিয়া উপদ্বীপ গত ২১ মার্চ রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের ভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পশ্চিমা জোট ও যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ক্রিমিয়াকে প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রির মাধ্যমে শাসনের আওতায় আনা হয়।
বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম পাক্কা খেলোয়ার হচ্ছেন পুতিন। মধ্যপ্রাচ্য হতে দূরপ্রাচ্য, ক্রিমিয়া, ভেনেজুয়েলা, তুরুস্ক প্রভৃতি অঞ্চল ও দেশের সমসাময়িক বিষয়াবলীতে পুতিন ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
সামান্য একজন গোয়েন্দা কর্তা থেকে আজ তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় থাকবেন ২০২৩ । ৬৭ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ভালবাসেন কুস্তি খেলতে এবং ফরমুলা ওয়ান গাড়ি চালাতে ভালবাসেন । তার কর্মী ও সহকারীরা তাকে টিজার বা বস বলে ডাকে। তাকে বলা হয় আনপ্রেডিক্টবেল পাওয়ারফুল ম্যান। স্টালিন পরবর্তী যুগে রাশিয়ার নতুন লৌহমানব রুপে আর্বিভূত হয়েছেন। রাশিয়ার জনগণ পুতিনকে তাদের ত্রাণকর্তা রুপে অভিহিত করেন। ক্ষমতা আসার পর রাশিয়ার পুর্ণজাগরণের জন্য পুতিন কৃতিত্বের সাক্ষর রেখে চলেছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানদেরকে তাৎক্ষণিক কাবু করার মুন্সিয়ানা রয়েছে পুতিনের। প্রখ্যাত গণমাধ্যম সিএনবিসি ফিফ্থ স্টেট নামে একটি প্রতিবেদন নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে পুতিনকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে দেখানো হয়েছে। রাশিয়ার সিংহভাগ জনগণ তাকে ভালবাসেন এবং তিনি চারবারের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। পুতিন রুশদের আশা আকাঙ্ক্ষার বাতিঘর। অর্থড্রক্স খ্রিষ্টান ধর্মমতে বিশ্বাসী পুতিন সর্বদাই রুশদের স্বার্থ সংরক্ষণে আত্মপ্রত্যয়ী ।
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।
রাজনীতি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদ বিরোধী সাম্প্রতিক আন্দোলন ও কিছু কথা

Published
3 years agoon
June 2, 2020
খোলা চোখে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদ বিরোধী সাম্প্রতিক আন্দোলন ও কিছু কথা
ঘটনাঃ
জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) গত ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলি শহরের পুলিশ। আটকের পর ডেরেক চৌভিন নামের এক(শ্বেতাঙ্গ) পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কের উপর চেপে ধরলে তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।এই হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে পুরো যুক্তরাষ্ট্র।
(প্রথম আলো-২রা জুন ২০২০)
বর্তমান আন্দোলনের পটভূমি-
চলমান এই আন্দোলনটি জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকান্ডই একমাত্র কারন নয়,এই আন্দোলনের পটভূমি হিসেবে ৩ টি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে-
প্রথমত–
পুলিশি নির্যাতন এবং হত্যাকান্ড,বিশেষত পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গদের নিহত হবার ঘটনা।
দ্বিতীয়ত –
বিচার ব্যবস্থা।গোটা বিচার ব্যবস্থা এবং আইনি বিধি বিধানগুলো সংখ্যালঘু,দরিদ্র এবং বিশেষত কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে না।
তৃতীয়ত –
সমাজে বিরাজমান বৈষম্য,যার প্রধান শিকার হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গরা।

ছবিঃ সংগৃহীত
এসবের সাথে সাথে আরো যে বিষয়টি মার্কিন সমাজে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে তা হলো বর্ণবাদ বিষয়ে সমাজে এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বীকৃতির প্রবণতা।সমাজপতি ও রাজনীতিবিদ উভয়েরই মনোভাবটা হলো,এই নিয়ে কথা না বললেই যেন বর্ণবাদ অপসৃত হয়ে যাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ড:
- ২০১৪ সালের ১৭ ই জুলাই নিউইয়র্ক শহরে অভিন্ন পন্থায় শ্বাসরোধ করে এরিক গার্ণারের হত্য।
- ২০১৪ সালের মিসৌরির ফার্গুসন শহরে মাইকেল ব্রাউনের হত্যা।
- ২০১৫ সালের বাল্টিমোরে ফ্রোডগ্রের হত্যা।
- ২০২০ সালের মার্চ মাসে কেনটাকির লুইভিল শহরে একজন কৃষ্ণাঙ্গ নার্সকে নিজ বাড়িতে হত্যা।
(সূত্রঃ প্রথম আলো-২রা জুন ২০২০)
বর্তমান আন্দোলন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রূপ নেওয়ার কারণ:-
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা মার্কিন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকান্ডের বেশ কয়েকটি ঘটনা দেখলেও সেসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনটা এবারের মতন জাতীয় বা আন্তজার্তিক রূপ লাভ করেনি।ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে বিশেষজ্ঞগণ ১৯৬৮ সালে মার্টিন লুথার কিংয়ের খুনের ঘটনার পর সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার সঙ্গে তুলনা করছেন। সিএনএ,নিউইয়র্ক টাইমসসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫ টির বেশি শহর সহ অন্যান্য মহাদেশের বিভিন্ন শহর এখন বিক্ষোভে উত্তাল।

ছবিঃ সংগৃহীত
বার্তা সংস্থা এপির মতে, এই পর্যন্ত বিক্ষোভকালে গ্রেফতার হয়েছে সাড়ে চার হাজার মানুষ,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামাতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ মিলিটারি ফোস ন্যাশনাল গার্ডের ৫ হাজার সদস্যকে।
তো প্রশ্ন হলো এবারের আন্দোলনটা এই জাতীয় বা আন্তজার্তিক রূপ নেওয়ার কারণ কী? বিশেষজ্ঞগন কয়েকটি কারনের কথা উল্লেখ করেছেন। সেসব হল-
১- অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ধীর নীতি গ্রহণ করাঃ-
২৫ মে মে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা সংগঠিত হলেও ঘটনার ৮ দিন পরে এখনো পর্যন্ত অভিযুক্ত ডেরেক চৌভিনকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।১-০৬-২০২০ ইং তারিখে তাকে আদালতে তোলার কথা থাকলেও নানা অযুহাত আর টালবাহানায় সেটাকে পিছিয়ে ০৮-০৬-২০২০ তারিখে আদালতে হাজির করার তারিখ নির্ধারন করা হয়।
২- লুইভিলে শহরে কৃষ্ণাঙ্গ নার্সকে হত্যাঃ

ছবি : সংগৃহীত
গত মার্চ মাসে লুইভিলে শহরে একজন কৃষ্ণাঙ্গ নার্সকে পুলিশ কর্তৃক নিজ বাড়িতে হত্যা করা হলেও সে ঘটনার এখন পর্যন্ত যথাপোযুক্ত কোন বিচার হয়নি।
৩- সাম্প্রতিক সময়ে শ্বেতাঙ্গবাদের প্রবল জোয়ার সষ্টি হওয়াঃ-
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষত ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে শ্বেতাঙ্গবাদের প্রতি তাঁর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন প্রদান শ্বেতাঙ্গবাদ আরো উস্কে দিচ্ছে।
৪-চীন ও ইরানের প্রকাশ্য মন্তব্য করাঃ-
বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীন ও ইরানের বৈরিতার সম্পর্কের কথা সবারই জানা আছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন,” যুক্তরাষ্ট্র মারাত্মক বর্ণবাদ সমস্যা এবং পুলিশের নিপীড়ন ঘটনায় তুলে ধরেছে এই বিক্ষোভ “
In response to what happened in the US, heads of @_AfricanUnion and many African countries have called for justice against racial discrimination. China stands with the African side in their just cause and will work with them to oppose all forms of racial discrimination. pic.twitter.com/pnyljEMkfs
— Spokesperson发言人办公室 (@MFA_China) June 1, 2020
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নিজ দেশের জনগনের উপর নিপিড়ন বন্ধ করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান।
( সূত্র: প্রথম আলো- ২ রা জুন ২০২০)
৫-বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারঃ-
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিক্ষোভকে গৃহযুদ্ধের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
এই আন্দোলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের গভীর ক্ষতটাই পৃথিবীর সামনে নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে দশকের পর দশক ধরে বর্ণবাদ চলছে।সাদা কালোর জাহিলি বিভাজন চলমান রয়েছে।ফলে সাম্যবাদ নামক মার্কিন ভন্ডামি আজ সবার সামনে উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।এরাই আবার বিশ্বের সামনে মানবতার বুলি কপচিয় সেই সাথে সারাবিশ্বে মানবতার সবক প্রদানের ফেরি করে থাকে।
আজ যেই কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ সারা বিশ্ব উত্তাল হয়েছে এমন পুলিশি নির্যাতনে বর্বর ইসরাইলী কর্তৃক ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে প্রায়শই ঘটে।দুঃখজনক হলেও সেসব নির্যাতনের সরব বা নিরব কোন প্রতিবাদই দেখতে পাওয়া যায় না।তবুও আমরা চাই পৃথিবীর সব অন্যায় আর অবিচারের প্রতিবাদ হউক।সব নিপিড়ন আর যুলুমের অবসান ঘটুক। মানবতা আর মাযলুম জনগোষ্ঠী মুক্তি পাক। মুক্তিপাক নিপীড়িত আরাকান, কাস্মীর, উইঘুর, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন সহ বিশ্বের সকল মাযলুম জনগোষ্ঠী।
লেখক- তরিকুল আলম তাসিকুল
শিক্ষার্থী – সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নির্যাতিত নিপীড়িত জনগোষ্ঠী কোনটি? কেউ হয়তো বলবে আরাকানে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের কথা, কেউ বলবে ইহুদি কর্তৃক নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের কথা, কেউ হয়তো বলবে ভারত সরকার কর্তৃক নিপিড়ীত কাস্মীরীদের কথা, কেউ হয়তো বলবে সামাজ্রবাদী কর্তৃক নিপিড়ীত গৃহহারা সিরিয়ানদের কথা,কেউবা বলবে ইয়ামেনের কথা।আর কেউ কেউ হয়তো বলবে উইঘুর মুসলিমদের কথা।পৃথীবির বিভিন্ন প্রান্তে নির্যাতিতত এসব জনগোষ্ঠীর সবাই মুসলিম ধর্মাবলাম্বী।নির্যাতিতি এসকল জনগোষ্ঠী থেকে উইঘুররা একটু বেশিই দুর্ভাগা এই হিসেবে যে,অন্যান্য সম্প্রদায়ের উপর করা নিপীড়নের খবর কিছুটা হলেও বিশ্ব মিডিয়ায় আসে, পৃথীবির লোকজন জানে কিছুটা হলেও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় কিন্তু উইঘুররদের উপর করা নির্যাতনের কোন খবরই বিশ্ব মিডিয়ায় তেমন একটা আসে না আর পৃথিবীর মানুষও সেসব সম্পর্কে খুব একটা জানে না।এর কারন হিসেবে মিডিয়ার উপর কমিউনিস্ট চীনের ব্যাপক নিয়ন্ত্রণের কথাটাই বলা যেতে পারে।অন্যভাবে বললে উইঘুর মুসলিমদের উপর করা নির্যাতন আর নিপীড়ন ‘মানবতাবাদীদের’ উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার খুব একটা কারন হয়তো হচ্ছে না।

উইঘুর জাতির ইতিহাস প্রায় চার হাজার বছর আগের। মূলত,এরা স্বাধীন পূর্ব তুর্কিস্তানের অধিবাসী।পূর্ব তুর্কিস্তান প্রাচীন সিল্ক রোডের পাশে অবস্থিত মধ্য এশিয়ার একটি দেশ,যার চতুর্পাশ্বে চীন, ভারত, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার অবস্থান।
উইঘুরদের সম্পর্কে পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। চীনে উইঘুর ছাড়াও হুই, কাজাখ, ডংজিয়াং, খালকাস, সালার, তাজিক, বাওন, উজবেক, তাতার মুসলিম রয়েছে। তবে এদের অধিকাংশ ই সেক্যুলার মুসলিম ফলশ্রুতিতে চীনা সরকার উইঘুরদের প্রতি যতটা খড়গহস্ত অন্যান্য মুসলিমদের প্রতি ততটা নয়।কারন হিসেবে বলা যেতে পারে উইঘুরদের চীনা কর্তৃপক্ষ জবর দখল করেছে বাকিদেরকে সেটা করা হয়নি।তাছাড়া উইঘুররা রাজনৈতিক ইসলামকে ধারণ করে বাকিরা সেটা করে না।সম্ভববত পৃথিবীতে সব শাসকরাই এই রাজনৈতিক ইসলামকেই ভয় পায়।কি আমেরিকা,কি ইউরোপ,কি সৌদি বা মধ্যপ্রাচ্য কি বাংলাদেশ বা পাকিস্তান।সব স্থানে একই চিত্র।

উইঘুররা মুসলিম হয়েছিল উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় ওয়ালিদের শাসনামালে।যখন তাঁর বিখ্যাত চার সেনাপতি পৃথিবীর চারদিকে অভিযান পরিচালনা করেছেন।ইতিহাসে আর কোন নৃপতিরা একসাথে এত জন বিজয়ী সেনাপতি ছিল কিনা আমার জানা নেই, এটাও জানা নেই যে এতো বিখ্যাত কোন সেনাপতির এমন করুন অবস্থা হয়েছিল কি না সেটাও।
বিখ্যাত এই চার সেনাপতির মধ্যে আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে ৭১১ খৃষ্টাব্দে বিজয় অভিযান পরিচালনা করেছেন মোহাম্মদ বিন কাসেম,মধ্যে এশিয়ায় ৭১২ খৃষ্টাব্দে কুতায়বা ইবনে মুসলিম,তাঁর মাধ্যমে ই এই মাজলুম উইঘুররা ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে।স্পেনে৭১১ খৃষ্টাব্দে তারেক বিন যিয়াদ ও মুসা বিন নুসাইর।ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস এই চারজন দিগ্বিজয়ী সেনাপতিকেই চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছিল।তাদের মতনই যেন তাদের হাতে বিজিত অঞ্চলের মুসলিমরাও আজ চরম নির্যাতন আর নিপীড়নের শিকার।স্পেনে প্রায় ৮০০ বছর মুসলিম শাসন থাকলেও তাদেরকে সেখান থেকে এমনভাবে নিচিহ্ন করা হয়েছে যে কোনকালে এই দেশটি মুসলিমরা আবাদ করেছে সেটা বুঝার আর কোন উপায়ই আজ বাকি নেই।মধ্য এশিয়ার উইঘুররা ছাড়া অন্যান্য দেশসমূহ দীর্ঘদিন সোভিয়েত রাশিয়ার কমিউনিস্ট শাসনাধীন থেকে তাদের করুন অবস্থার কথা ইতিহাসের পাতায় চোখ বুলালেই বুঝতে পারা যায় আর সেখানকার চেচনিয়া বসনিয়ার কথা আর নাইবা বললাম।বাকি থাকলো আামাদের ভারতীয় উপমহাদেশের কথা,ভারতবর্ষে সুলতানী আমল ও মুঘল আমল মিলিয়ে মুসলমানরা ৮০০ বছর শাসন করেছে,সুলতান আর মুঘলরা এই ভারতবর্ষকে আপন করে সাজিয়েছে কিন্তু বর্তমান সময়ে শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার,ভারতের মুসলিমদের কী অবস্থা, কাস্মীরের কেমন পরিস্থিতি সেটা বোধকরি নতুন করে বলার কিছু নেই।মাঝে মাঝে আমার দেশটির কথা ভাবি,আল্লাহ আমাদেরকে স্বাধীনতার যে নিয়ামত প্রদান করেছেন তা কি আমরা অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবো?ভিনদেশী হায়েনা আর তাদের এদেশীয় দালালদের কার্যক্রম দেখলে বড্ড ভয় লাগে আবার যুবকদের দেশপ্রেম আর স্বদেশপ্রীতি দেখলে মনে আশা জাগে।

উইঘুরদের মুসলিম হওয়ার পরের ধারাবাহিক ইতিহাস :
★৭৫৫ সালে আন লু সান নামের একজন জেনারেল চীনের কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজের অধীনে থাকা অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করলেন।
★চীনের কেন্দ্রীয় শাসক চীনা সম্রাট এই বিদ্রোহ দমনের জন্য উইঘুর খানাতেরর কাছে সাহায্য চাইলেন।(খানাত বা খাগানাত তুর্কি শব্দ যা খান শাসিত একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নির্দেশ করে)
★সম্রাট উইঘুর খানাতের সহায়তায় আন লু সাং এর বিদ্রোহ দমন করার পরে বিশ্বাসঘাতকতা করে খোদ খানাতকেই দখল করে নিতে উদ্যত হল।
★স্বাধীনচেতা উইঘুর খানাত স্বল্প শক্তি আর স্বল্প জনবল হওয়া সত্ত্বেও বিপুল জনবল আর শক্তিশালী চিনা সেনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো।কিন্তু একটা সময় বিপুল সংখ্যক উইঘুর নিহত হবার পরে স্বল্পসংখ্যক বেঁচে থাকা উইঘুর পিছু হটে এবং কোচো রাজত্বে আশ্রয়গ্রহণ করে।সেই থেকে শুরু হয় তাদের টিকে থাকার লড়াই।
★১০০৬ সালে উইঘুরদের ত্রাণকর্তা হয়ে হাজির হলেন তুর্কি বীর ইউসুফ কাদির খান।তাঁর নেতৃত্বেই পুনরায় মুসলিম সালতানাত ‘কারা খানিদ খানাত’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
★১৮ শতকের শেষের দিকে কিং রাজারা জুনগড় এবং তারিম উপত্যকার পূর্বাঞ্চল দখলের মাধ্যমে স্বাধীন উইঘুর রাজ্যকে নিজেদের অধীনে নিয়ে নেয়।
★এবার উইঘুরদের ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হন তাসখন্দ নিবাসী ইয়াকুব বেগ।এই ইয়াকুব বেগ এর নেতৃত্বে উইঘুররা সংঘটিত হয় এবং কিং রাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কাশগরের আশপাশের অঞ্চল নিয়ে গড়ে তোলে শরিয়াভিত্তিক স্বাধীন কাশগরিয়া রাষ্ট্র।এই কাশগরিয়া রাষ্ট্রকেই আধুনিক পূর্ব-তুর্কিস্তান এর ভিত্তি ধরা হয়।তুরস্কের উসমানি খেলাফতের খলিফা তাঁকে সমর্থন দিয়ে ‘আমিরুল কাশগরিয়া’ উপাধি প্রদান করেন।
★১৮৮৭ সালের ২২ মে ইয়াকুব বেগ মৃত্যুবরণ করেন।তাঁর মৃত্যুর পর পরই চীনের কিং রাজা ও রাশিয়ার জার শাসকরা স্বাধীন ইসলামী উইঘুর এই রাষ্ট্রটিকে দখল করে নিতে উঠেপড়ে লাগে।
★প্রায় সাত বছর লড়াই করার পরে ১৮৮৪ সালের ১৮ নভেম্বর চীনের মাঞ্চু বা কিং রাজা কাশগর কেন্দ্রীক পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে দখল করে নেয় এবং সেই সাথে ইয়াকুব বেগের চার সন্তান,নাতি নাতনি ও চার স্ত্রীদের সবাইকে বন্দী করা হয়।বিভিন্ন মেয়াদে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে মাত্র ১১ বছরের মধ্যে সবাইকেই শহীদ করা হয়।
( সূত্র -উইঘুরের কান্না-মুহসিন আবদুল্লাহ,পৃষ্ঠা ১১-১৭)
★১৯১১ সালে স্বাধীন তুর্কিস্তানে চীনের মাঞ্চু সাম্রাজ্যের পতনের পর সেখানে প্রত্যক্ষ চীনা শাসন চালু করে এ অঞ্চলকে চীনের জিনজিয়াংয়ের সাথে একীভূত করা হয়।
(সূত্র-দৈনিক যায়যায়দিন, ২৫ মে,২০১৯)
★১৯৩৩ সালে পুনরায় উইঘুর মুসলিমরা কাশগর ও এর আশপাশের এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করে স্বাধীন পূর্ব তুর্কিস্তান রাষ্ট্র।
★চাইনিজ জেনারেল শেং শি চাই এর নেতৃত্বে চাইনিজ হানরা এই স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে বেশিদিন স্বাধীন থাকতে দেয়নি।দখলদার চাইনিজ (হানদের) ব্যাপক হামলা আর আক্রমণের মুখে অল্প দিনেই এই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়।
★১৯৪৪ সালে তুর্কিস্তান ইসলামী পার্টি নেতৃত্বে তিয়েশান পর্বতমালার ওপারে ঘুলজা এবং এর আশপাশের অঞ্চলে বিপ্লবের মাধ্যমে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয় উইঘুর মুসলিমদের পূর্ব-তুর্কিস্তান।
★১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর ১৩ ই অক্টোবর চীন সরকার পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে নেয়।
★চীন সরকারের এই দখলদারির বিরুদ্ধে উইঘুররা সশস্ত্র প্রতিরোধ অব্যাহত রাখে। তাদের এই লড়াই ৬ বছর অব্যহত থাকার পরে ১৯৫৫ সালের ১লা অক্টোবর কমিউনিষ্ট বাহিনী পুরো উইঘুর এলাকার দখল নেয়।
(সূত্র -উইঘুরের কান্না- মুহসিন আবদুল্লাহ)

সেই পূর্ব তুর্কিস্থানই আজকের জিনজিয়াং প্রদেশ।সেখানকার স্বাধীন নাগরিক উইঘুর মুসলিমদেরকে কথিত সায়ত্ত্বশাসনের নামে চীনা শাসকরা পরাধীনতার শিকল পরিয়ে রেখেছে যুগ যুগ ধরে।নিজেদের ভূমিতে নিজেদের মত করে থাকতে চাওয়াটা নিশ্চয়ই অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত হবে না?নিশ্চয়ই সেখানে কোন সামাজ্রবাদী আঘাত হানবে না?কিন্তু পৃথিবীতে মুসলিম নিপিড়নের ক্ষেত্রেই আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় সকলেই নিরব থাকে। এমনকি মুসলমানদের নেতৃত্বের দাবিদার তারাও।নির্যাতনের এমন কোন উপায় বাকি রাখেনি যেটা চীনা কর্তৃপক্ষ করেনি।
যে জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুররা ছিল শতকরা ৯৫ ভাগ হয়ে সংখ্যাগরিষ্ট অধিবাসী সেখানে আজ চীনা রাষ্ট্রীয় নিপিড়ন আর রাষ্ট্রীয় কূটকৌশলে উইঘুরদের অবস্থান শতকরা ৪৫ ভাগে নেমে এসেছে।রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে ব্যাপক আকারে চীনা হানদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।যারা আজকে সেখানে শতকরা ৪০ ভাগ অধিবাসী হয়ে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হিসেবে উপনীত হয়েছে।কে জানে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এই হানরাই হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীতে পৌঁছাবে।
আর বর্তমান অবস্থার কথা আর কীইবা বলবো,কম বেশি সবারই জানা আছে।চীনা সরকার জিনজিয়াং প্রদেশে এই বিপুল সংখ্যক উইঘুরদের কেবল পরাধীনতার স্বাদ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বরং তাদের উপর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চাপিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর।জিনজিয়াংএ তাদের জনসংখ্যার পরিমাণকে অর্ধেকে নামিয়ে আনলো,তাদের মাতৃভাষা উইঘুর ভাষাকে রাষ্ট্রীয় নিপিড়নের মাধ্যমে পিছিয়ে দেওয়া হলো,তাদেরকে কালচার শিখানোর নাম করে বন্ধী শিবিরে আটকে রাখলো। সবচেয়ে ভয়ংকর যে বিষয়টি সেটি হল-
২০১৬ সালে ‘মেকিং ফ্যামিলি’ নামের একটি উদ্যোগ চালু করে বেইজিং সরকার।এর মাধ্যমে উইঘুর পরিবারকে প্রতি দুই মাসে কমপক্ষে পাঁচ দিনের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের অতিথি হিসেবে থাকতে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।মুসলিমদের সাথে পার্টির ‘সুসম্পর্ক সৃষ্টির’ জন্য নাকি এই উদ্যোগ।কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় মুসলিম নারীদের সম্ভ্রমহানির অভিযোগ ওঠে।মানসিকভাবে শিশুদেরও নির্যাতন করা হচ্ছে।তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে কমিউনিস্ট পার্টির শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।সেই সাথে শিশুদের মাতৃভাষার পরিবর্তে ম্যান্ডারিন তথা চীনা ভাষা শেখানো হচ্ছে।
( সূত্র- অন্য দিগন্ত-১৯ নভেম্বর, ২০১৯)

আজকে পশ্চিমা বিশ্ব যে কিছু কিছু কথা বলছে সেটা মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি, কিংবা মানবতার জন্য বলছে তা না,চীনের সাথে রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্য তাদেরকে কোনঠাসা করতেই এসব বলা।মন্দের ভালো হিসেবে তবুও তো বলা।পবিত্র কাবার খাদেম বিন সালমান চায়না সফরে গিয়ে উইঘুর নির্যাতনের বৈধতা দিয়ে আসে,হালের কথিত মুসলিম নেতা ইমরান খান জানেনইনা উইঘুরদের উপর নির্যাতন হচ্ছে কি না,ওআইসি নিশ্চুপ, জাতিসংঘে এই বিষয়ে আলোচনার কথা উঠলেই খোদ ১৫-২০ টি মুসলিম রাষ্ট্র ই এর বিরুদ্ধাচারণ করে সেখানে পশ্চিমা বিশ্বের এই একটু আধটু কথা বলার বিষয়টি(নিয়ত যেমনই থাকুক না কেন) তো ইতিবাচক হিসেবেই দেখতে হবে।
আজকে খবরে দেখলাম উইঘুর নির্যাতনের সাথে অভিযুক্তদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য একটি ফাইল ট্রাম্প সাহেবের সাক্ষরের জন্য তার অফিসে পাঠানো হয়েছে।তিনি সাক্ষর দিলেই সেটা আইনে পরিণত হবে।
আমার প্রত্যাশা পৃথিবীর সকল দেশেই জাতিগত নিপিড়ন বন্ধ হউক।সবার মধ্যেই রাজনীতিকে ছাপিয়ে মানবতাবোধ জাগ্রত হউক।সুখে থাকুক পৃথিবীর সব অংশের সব জাতি ধর্ম আর বর্ণের মানুষ।
লেখক–
তরিকুল আলম তাসিকুল
শিক্ষার্থী, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেকগুলো দেশ ইউরোপ ও জাপানের উপনিবেশ হতে স্বাধীনতা লাভ করে এবং বিশ্বের স্বাধীন রাষ্ট্রের তালিকায় তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসাবে এদের আর্বিভাব ঘটে। অপরদিকে যুদ্ধপরবর্তী পরাশক্তি আমেরিকাসহ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে এবং তারা তাদের অর্থনৈতিক বাজার হিসাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে বেছে নেয়। হতদরিদ্র ও নব্য স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোকে উন্নয়নের সহযোগিতার নামে তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। আর এভাবে শুরু হয় নতুন উপনিবেশবাদের জয়যাত্রা, যার প্রদান হাতিয়ার হলো অর্থনীতি।
উপনিবেশ স্থাপনের পিছনে প্রধান লক্ষ্য থাকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শাসন ক্ষমতা বৃদ্ধি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শাসন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উপাদানগত পরিবর্তন আসলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ কোনো পরির্বতন আসেনি। যুদ্ধপূর্ববর্তী সময়ে উপনিবেশভুক্ত অঞ্চলগুলো হতে কাঁচামাল পাচার করে তার দ্বারা উৎপাদিত পণ্য ঐসব উপনিবেশিক অঞ্চলে রপ্তানি করার মাধ্যমে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতো। তেমনি যুদ্ধোত্তরকালে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তাদের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ বাড়াতে থাকে। দরিদ্র দেশগুলো হতে সস্তায় পাওয়া শ্রম ও জমি (অর্থনীতিতে জমি হলো উৎপাদনের স্থান) বিনিয়োগের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করে উৎপাদন করে থাকে এবং উৎপাদিত পণ্য আবার বিশ্বায়নের দোহাই দিয়ে ঐসব প্রান্তিক দেশগুলোতে বাজারজাতকরন করে থাকে। যার মাধ্যমে প্রান্তিক দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে উন্নত বিশ্বের হস্তক্ষেপের পথ সুগম হয়।
ছবি : সংগৃহীত
উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উপর তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার হাতিয়ার হিসাবে বিশ্বায়ন ও বহুজাতিক কোম্পানীগুলোকে গ্রহণ করে। বিশ্বায়নের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশ মুক্ত থাকবে। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশগুলোর বহুজাতিক সংস্থাগুলো অনায়াসে তৃতীয় বিশ্বের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে, কিন্তু এর বিপরীতে তৃতীয় দেশের কোম্পানী অর্থ ও প্রযুক্তিগত সুবিধার অভাবে দিন দিন ঘাটতির মুখে পতিত হতে থাকে। একপর্যায়ে বহুজাতিক সংস্থাগুলো একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে বাংলাদেশের বাজারে দেশীয় সাবান এ্যারোমেটিকের বাজার ধ্বংস এবং অপরদিকে ইউনিলিভারের লাক্সের একচেটিয়া আধিপত্যের কথা বলা যায়। আবার বহুজাতিক সংস্থাগুলোতে চাকরিরত দেশীয় শ্রমিকের চাকরী হারানো, বেকারত্ব বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ স্থগিতের ভয়ে দেশীয় পণ্য রক্ষা এবং বিদেশী বহুজাতিক সংস্থার কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনা। ফলে পরোক্ষভাবে ঐসব কোম্পানীগুলো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়। উদাহরণস্বরূপ আফ্রিকান দেশগুলোতে চীনের বহুজাতিক সংস্থাগুলো আধিপত্য উল্লেখযোগ্য।
অর্থনৈতিক উপনিবেশবাদ প্রসারের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের দেশে উন্নত বিশ্বের বিনিয়োগ ব্যবস্থা। ১৯৪৬ সালের পর থেকে সদ্য স্বাধীন হওয়া রাষ্ট্রগুলোর আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ঠিক তখনি সুযোগটি শক্তিশালী ধনী রাষ্ট্রগুলো কাজে লাগাতে থাকে। তারা তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং এর বিপরীতে কিছু সংস্কারমূলক শর্তারোপ করে। এসব শর্তাবলির মাধ্যমে অনেক সময় বিনিয়োগকারী দেশ বিনিয়োগকৃত দেশের পররাষ্টনীতি ও সামরিক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যেমন ২০১৬ সালের শেষের দিকে চীন শ্রীলংকার হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ইজারা নেয়। যার ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ থাকবে চীনের হাতে আর মাত্র ২০ ভাগ থাকবে শ্রীলংকার সরকারের হাতে। যদিও বলা হয়েছে শুধুমাত্র বাণিজ্যের জন্য এ বন্দর ইজারা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে যে এখানে সামরিক নৌঘাঁটি স্থাপন করে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের পদক্ষেপ চীন গ্রহণ করবে তা সহজেই অনুমেয়। এছাড়া অতি সাম্প্রতিককালে চীনের গৃহীত One Belt One Road Policy চীনকে যে এ অঞ্চলের পরাশক্তি হিসাবে পরিণত করছে তা দিন দিন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে।
ছবি : সংগৃহীত
এখন WTO বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ও বিশ্বব্যাংক এর কথা ধরা যাক। এ দুটি সংস্থা অর্থনৈতিক উপনিবেশ বিস্তারের মূখ্য উপাদানের ভূমিকা রাখছে। বিশ্ব বাণিজ্য পরিচালনার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চুক্তিগুলোর দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় এসব চুক্তি উন্নত বিশ্বের জন্য তৈরী।এসব চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মুক্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের স্বার্থ হাসিল করা। এর পিছনে উন্নত বিশ্বের উদ্দেশ্য হচ্ছে যাতে তাদের প্রযুক্তি তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো অনুকরণ ও ব্যবহার না করতে পারে। এর ফলে তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতির ওপর উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। আর এ প্রতিযোগিতাপূর্ণ মুক্তবাজারে উন্নত বিশ্বের সাথে বাণিজ্য করে তৃতীয় বিশ্বের দেশ টিকে থাকতে পারেনা। এর ফলে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর বাণিজ্যের ঘাটতির পাশাপাশি আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রেও দীর্ঘমেয়াদী ঘাটতি দেখা দেয়।
এসব ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে বিশ্বব্যাংক এর স্মরণাপন্ন হতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রদানের পূর্বে কিছু শর্তারোপ করছে। যার সবগুলো পূরণ করা তৃতীয় বিশ্বের পক্ষে সম্ভবপর নয়, আবার পূরণ করলে দেখা যাচ্ছে ঋণ প্রত্যাশী দেশগুলোর অবকাঠামোগত এমনকি সরকারী নীতি নির্ধারণে বিশ্বব্যাংক এর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক এর অর্থের প্রধান উৎস,কাঠামোগত গঠন এবং পরিচালনার সম্পূর্ণ উন্নত বিশ্বের উপর ন্যস্ত। যেমন বিশ্বব্যাংক এর প্রেসিডেন্ট পদ আমেরিকা আর আইএমএফ এর প্রেসিডেন্ট পদ যুক্তরাজ্যের জন্য নির্ধারিত। অতএব বলাই যায় যে, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মাধ্যমে উন্নত বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে চলেছে।
এরকম শতাধিক উদাহরণ ও উন্নত বিশ্বের পদক্ষেপ আলোচনা করা সম্ভব যার মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর ওপর নতুন করে অর্থনীতির মাধ্যমে উন্নত বিশ্ব তাদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার কার্য সঠিক ও সফলভাবে পরিচালনা করে যাচ্ছে। বিশ্ব রাজনীতির এ নতুন কাঠামোই হলো অর্থনৈতিক উপনিবেশবাদ, অর্থনীতি যার মূল চালিকা শক্তি।
শাহ্ আলম
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।
সর্বাধিক পঠিত
-
ইতিহাস4 years ago
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বৃহৎশক্তিদের ভূমিকা
-
অন্যান্য3 years ago
উন্নয়ন এবং নারী ক্ষমতায়ন
-
শিল্প-সাহিত্য3 years ago
দ্রোহ -প্রেম ও যৌবনের কবি কাজী নজরুল ইসলাম
-
শিল্প-সাহিত্য3 years ago
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের রাজনৈতিক ইতিহাস (পর্ব ০১)
-
শিল্প-সাহিত্য3 years ago
শব্দশ্রমিক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
-
বাংলাদেশ4 years ago
বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা
-
শিল্প-সাহিত্য4 years ago
প্রকৃতি,প্রেম ও একাকিত্বের কবি মহাদেব সাহা
-
ইতিহাস3 years ago
সম্রাট শাহজাহানঃ সৌন্দর্য্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে