ক্রিকেটকে ভদ্র লোকের খেলা বলা হয়। কারণ ভদ্রলোকের দেশ ইংল্যান্ডেই এই ক্রিকেট খেলার জন্ম। ১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট খেলার মধ্যে দিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। আজ পর্যন্ত ক্রিকেট জগতে যত খেলোয়ারের আর্বিভাব হয়েছে এবং ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে তাদের মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের ”এ. বি. ডি ভিলিয়ার্স ।
মিস্টার ৩৬০ এবি ডিভিলিয়ার্স ছবি : সংগৃহীত
উৎসাহ দিয়ে মানুষকে তার সফলতার দ্বার প্রান্ত পৌছে দেওয়া যে সম্ভব তার জ্বলন্ত প্রমাণ ডি. ভিলিয়ার্স ও তার বাবা। ডি.ভিলিয়ার্সের বাবা ছিলেন একজন ডাক্তার এবং একই সাথে একজন স্পোস্টর্সম্যান। এ কারণে ছেলেকে সব সময় খেলার পক্ষে উৎসাহ দিতেন। ছেলেটিও খেলতে খুব পছন্দ করত। ছেলেটির জীবনে এমন কোন দিন নাই যে দিন খেলা বাদে কাটিয়েছেন। আর সেই ছেলেটি আজ ক্রিকেট সৌন্দর্যের এক উজ্জ্বল প্রদীপ, এক ক্রিকেট কিংবদন্তী। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে অসাধারণ নৈপুণ্যতার সাথে উইকেটের সামনে চারিদিকে সমানভাবে ব্যাট করতে সমর্থ্য ছিলেন এ. বি. ডি ভিলিয়ার্স ।
এবি ডিভিলিয়ার্সের ৩৬০ কোণে ব্যাটিং ছবি : সংগৃহীত
ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে সেরা খেলোয়ার হিসেবে খেতাব পাওয়ার কারণ হলো, ডি. ভিলিয়ার্স এমন একজন ব্যাটসম্যানস যে ব্যাট হাতে শাসন করতে পারে বিশ্বের যে কোনো বোলারকে। ক্রিকেটের ২২ গজে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তিনি। তিনি যা চান তাই করেন নিত্যদিনে।অবিশ্বাস্য ফর্ম ও অভাবনীয় সব শটের কারণে বোলারদের চোখে খলনায়কে পরিনত হওয়া ব্যাটসম্যান হচ্ছে তিনি। ক্রিকেটের সব ধরণের ব্যাকারণকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ৩৬০ ডিগ্রী আ্যাঙ্গেলে চারিদিকে শর্ট খেলতে সিদ্ধ হস্ত এই ব্যাটসম্যান। আর এই কারণেই ভক্তরা তাকে ভালবেসে ডাকেন ’মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’। রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন-
ডিভিলিয়ার্স ক্রিকেটের নিয়মই বদলে দিচ্ছে ।
আবার কেউ কেউ বলেন ক্রিকেটের ’সুপারম্যন’, বিশ্বসেরা বোলারটিকে যিনি পাড়ার বোলারে পরিণত করতে খুব একটা সময় নেন না। আর তাই তাকে আসলে ’সুপারম্যন না বলে আর কি বা বলা যায়।
আকাশ চোপড়া বলেছিলেন,
এবি এর ডিএনএ টেস্টের দাবি জানায় কেননা ক্রিকেট মানুষের খেলা।
মাইকেল ভন বলেছিলেন,
“ক্রিকেট জিনিয়াস বলতে যা বোঝায়, এবি হল এমন একজন”।
তার পুরো নাম ’আব্রাহাম বিনজামিন ডি ভিলিয়ার্স’। তার বাবা ’ ড. এ.পি. ডি ভিলিয়ার্স ’এবং মা ’ মিলি ডি. ভিলিয়ার্স ’। ১৯৮৪ সালে ১৭ ই ফেব্রুযারিতে সাউথ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া শহরে জন্মগ্রহন করেছিলেন ক্রিকেটের এই মহানায়ক।
এবির অসাধারণ স্টাম্পিং, ছবি:সংগৃহীত
এ.বি তার পরিবারের ছোট সন্তান। তার জন ও ওয়েসেলস নামে বড় দুই ভাই আছে। তার বাবা ডাক্তারের পাশাপাশি একজন দেশ সেরা রাগবি খেলোয়ার ছিলেন। এ.বি ছোটবেলা থেকেই প্রতিদিন কিছু না কিছু খেলা করতেন। আমরা ক্রিকেট খেলায় অল-রাউন্ডার দেখেছি কিন্তু রিয়েল লাইফ অল-রাউন্ডার খুবই কম দেখেছি। রিয়েল লাইফ অল-রাউন্ডার হিসেবে যদি কাউকে বলা হয় তাহলে চোখ বন্ধ করে আমরা এ. বি. ডি. ভিলিয়ার্স কে বলতে পারি। এ. বি. ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্য খেলায়ও সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন। নিজের দেশের হয়ে রাগবী দলেও খেলেছেন এবং রাগবী টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। তিনি ’আন্ডার-১৬’ হকি টিমের একজন নিয়মিত সদস্য ছিলেন। তিনি সাঁতারেও চ্যাম্পিয়ানশীপ জিতেছেন জাতীয় দলের হয়ে। এছাড়াও তিনি ’আন্ডার-১৯’ ন্যাশনাল ব্যাডমিন্টনেও চ্যাম্পিয়ান ছিলেন। এবং আন্ডার-১৭ ফুটবল টিমেরও একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ক্রিকেটে পা রাখার আগে সাউথ আফ্রিকার সবচেয়ে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ হিসেবে পুরুষ্কৃত হন।
পড়াশুনাতেও খুব মনযোগী ছিলেন ডি. ভিলিয়ার্স। তিনি আফ্রিকান্স হোয়ের সিয়ানস্কুল বা ’বয়েজ স্কুলে’ পড়াশুনা করেন।এটি প্রিটোরিয়ার অত্যন্ত জনপ্রিয় সরকারী বিদ্যালয়ে । সাউথ আফ্রিকার জাতীয় ক্রিকেট টিমের আরো দু’জন খেলোয়ার এই স্কুলে পড়াশোন করেছেন। তারা হলো-জ্যাক রুডলফস ও ফ্যাফ ডু প্লেসিস। ডু প্লেসিস ও এ. বি ছিলেন সহপাঠী। স্কুল লাইফে এ.বি একটি আশ্বার্যজনক সাইন্স প্রজেক্ট করে সাইকে অবাক করে দেন। এবং সেই প্রজেক্টের জন্য তৎকালালীন আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ’নেলসন মেন্ডেলার’ কাছ থেকে জাতীয় পুরুষ্কার নেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন ছোট বেলায় তার স্বপ্ন ছিলো মেডিসিন বিষয়ে পড়ালেখা করে একজন ভালো ডাক্তার হওয়া। কিন্তু তিনি প্রচুর খেলাধূলা করতেন। তাই ডাক্তার হওয়া আর হয়নি।
সব ধরণের খেলার পারদর্শীতা থাকা শর্তেও তিনি ক্রিকেটকে পেশাদার খেলা হিসেবে বেছে নেন। মাত্র বিশ বছর বয়সে ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলেন। এ. বি প্রথম সাউথ আফ্রিকান প্লেয়ার যিনি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ’ডাবল সেঞ্চুরি’ করেন। ২১৭* নট আউট। তিন ধরনের ক্রিকেটেই তিনি সমান পারদর্শী। তিনি তার ব্যাটে ক্রিকেট সৌন্দর্যের পর্সা সাজিয়ে ছিলেন। একজন ব্যাটসম্যান যে কতটা পারফেক্ট ব্যাটসম্যন হতে পারে সেটি এ. বি. ডি. ভিলিয়ার্স এর ব্যাটিং না দেখলে বোঝা যেত না। যে কোনো বোলার কে এবং যে কোনো বল স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারতেন। তার নামের পাশে এমন কিছু রেকর্ড আছে যা হইত ভাঙ্গা প্রায় অসম্ভব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষের ওডিআই ম্যাচ এ. বি. ডি. ভিলিয়ার্সের সেই দুর্ধর্ষ খেলা আজও সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। সেই এক ম্যাচেই তিনি এক সাথে ৫ টি বিশ্ব রেকর্ড করেন।
দ্রুততম দেড়শ রান পূরণ উদযাপন, ছবি :সংগৃহীত
১. দ্রুত হাফ সেঞ্চুরি মাত্র ১৬ বলে। ২. দ্রুত সেঞ্চুরি মাত্র ৩১ বলে। যেটা আগে ছিলো নিউজিল্যান্ডের কোরি এন্ডারসনের ৩৬ বল। ৩. দ্রুত দেড়শত রান ৪৯ বল। ৪. এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট ৩৩৮.৬। ৫. সবচেয়ে বেশি ছক্কা ১৬টি। যৌথভাবে আছেন ইন্ডিয়ার রোহিত শর্মা।
এছাড়াও তিনি একমাত্র টেস্ট প্লেয়ার যিনি ৭৮ টেস্ট ইনিংস খেলে কোনোরুপ শূণ্য রান করেননি। যা একটি বিরল রেকর্ডরুপে চিহ্নিত। অবশেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এ রেকর্ড ভেঙ্গে যায়। টেস্টে ধারাবাহিক ভাবে অর্ধ-শতক (১২টি) লাভকারী ক্রিকেটার এ. বি. ডি. ভিলিয়ার্স । এছাড়া ’এবি ডি ভিলিয়ার্স একটি টেস্ট ম্যাচে সর্বাধিক আউট করে বিশ্বরেকর্ডের অংশীদার আরসি রাসেলের সাথে। আরসি রাসেল ১৯৯৫/৯৬ মৌসুমে জোহানেসবার্গে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার খেলায় ১১ টি আউট করে এ রেকর্ড করেন। আর ডি ভিলিয়ার্স ২০১৩ সালে ৪ ফেব্রæয়ারি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট খেলায় ১০ টি আউট করেন এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭ বলে ১০৩ রান করেন। এর ফলে একজন উইকেট-রক্ষক হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরিসহ দশটি আউট করেন। এরকম অসংখ্যা রেকর্ডের মালিক আমাদের সবার প্রিয় এ বি ডি ভিলিয়ার্স।
আইসিসি ওডিআই প্লেয়ার অব দা ইয়ার , ছবি :সংগৃহীত
আইসিসি ওডিআই প্লেয়ার অব দা ইয়ার জিতেছেন তিন বার (২০১০, ২০১৪, ২০১৫)। ৪১৮ টা ম্যাচ খেলেছেন সাউথ আফ্রিকার হয়ে, ঝুলিতে আছে ৪৭টি আন্তর্জাতিক শতক ইনিংস। ব্যাটিং গড় টেস্ট এবং ওডিআইতে যথাক্রমে ৫০.৬৬ এবং ৫৩.৫০।
তার জীবনী নিয়ে একটি বই লেখা হয়েছে ’এ বি দ্যা অটোবায়োগ্রাফি’।
ডিভিলিয়ার্সের আত্মজীবনী ,ছবি:সংগৃহীত
২০১৭ সালে তিনি টেস্ট খেলা থেকে অবসর নেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি শেষমেশ ক্রিকেটপ্রেমীদের হতবাক করে এক ভিডিও বার্তায় তিনি সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানান। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন ’আমি ক্লান্ত ,আমি অনেক খেলেছি এখন সময় এসেছে অন্যদের সুযোগ করে দেওয়ার আমি সব ধরনের ক্রিকেট খেলা থেকে আজ থেকে অবসর নিলাম’। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ডি.ভিলিয়ার্সবিহীন সাউথ আফ্রিকা ক্রিকেট দল রংহীন ছিল। ক্রিকেটপ্রেমীরা মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রী, সুপারম্যান ডি.ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং সৌন্দার্যকে যেন খুব বেশীই মিস করেছে। ভাল থাকবেন ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র, মিস্টার ৩৬০ এ,বি,ডি ভিলিয়ার্স।
লেখক :
এনামুল হাসান টমাস
তথ্যসূত্র:
crickbuzz.com
espncrickinfo.com
thegurdiansports.com
news18.com
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।
বাংলাদেশ যুবারা জিতসে, অভিনন্দন জানান। ফুল দিন, সম্মানের সাথে ওদেরকে নিজেদের বাসায় পৌঁছিয়ে দিন।
তবে দয়া করে এখনই ফ্ল্যাট ঘোষনা কইরেন না। আকবর আলীর মা বা পারভেজ ইমনের বাবাকে গণভবনে ডাইকেন না। এদেরকে টেলিভিশন প্রোডাক্ট বানাবেন না। এদের দিয়ে এখুনি মডেলিং করানোরও দরকার নেই।এখনই ওদের কে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্টারের সাথে তুলনা কইরেন না।।ওদেরকে নিঝের পরিচয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে দিন।
বরং ওদেরকে আইসোলেট করুন। আইসোলেট করুন দেশের নোংরা ক্রিকেট সংস্কৃতি থেকে। ২০০৪ আন্ডার নাইন্টিনে শিখর ধাওয়ান ছিল ইন্ডিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান। ধাওয়ান জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে প্রায় অর্ধ যুগ পরে। ধাওয়ান এখনো উন্নতি করছে নিজের খেলায়, এখনো অজিদের সামনে পেলেই জ্বলে উঠছে বারবার।
সেই বিশ্বকাপের আরেকজন সুরেশ রায়না। প্রায় এক দশক দাপটের সাথে সাদা বলে খেলেছে রায়না৷ দলের বাইরে গেলেও রায়না এখনো আইপিএলের অন্যতম হট কেক।
একই বিশ্বকাপে আমাদের স্টার ছিল নাফিস ইকবাল। নাফিস ইকবালের লাস্ট যে খবর শুনেছিলাম, আইপিএল এ ফিজের দু ভাষি হিসেবে কাজ করতে নাকি ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন দুই বছর আগে। আহারে আইপিএল!.
আরেকজন আফতাব আহমেদ। অনেক আগে কোন ছিনতাইকারী হারিকেন দিয়ে বাড়ি মেরে তার মুখ ভচকায়া দিয়েছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছিল। এখন নাকি টুকটাক কোচিং করাচ্ছেন।
এহসানুল হক সেজান,আল শাহরিয়ার রোকনের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে?অনেক সম্ভাবনা নিয়ে এসেও মনে রাখার মতো কিছুই করতে পারেন নি তারা।।
নাঈম ইসলাম টিকে আছেন এখনো না থাকার মতো করেই। এবার তো বিপিএলও তাকে দেখা গেল না। ক্যারিয়ার সম্ভবত শেষ।
অনূর্ধ্ব ১৯ স্টার এনামুল, কোনো কাজে লাগল না। স্টার লিটন দাস দু তিনটা চার মেরেই কাজ শেষ মনে করে(যদিও ভালো করার যথেষ্ট সম্ভাবনা তার আছে)৷ শান্ত থেকে এখনো কিছু পাওয়া গেল না। মিস ডিরেকশনে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হওয়া মিরাজ দলের বাইরে।মুস্তাফিজ আর রাবাদার অভিষেক কয়েক মাস আগে পরে।।শুরুতে ফিজকে অনেক বেশি সম্ভাবনাময় মনে হলেও এখন সে রাবাদার চাইতে অনেক পিছিয়ে।।
তবে যুব দল থেকে নিজেদের ক্যারিয়ারকে ভালো অবস্থায় কেউ নিতে পারেন নি এমন নয়।। এদের সংখ্যাটা কম।।মুশফিক,সাকিব,তামিম জ্বলন্ত উদাহরন।।
তাই,প্লিজ এই যুব দলটাকে হারাতে দিয়েন না।
এই দল যে বহু সাধনার ফসল সেটা বিদেশী ধারাভাষ্যকাররাও বারবার বলছিল। দু বছরে অনেক শ্রম দিয়ে এদেরকে তৈরি করা হয়েছে। প্লিজ এদের কেয়ার নিন।
ফ্লাট দিয়ে এখুনি অতি বিত্তবান বানাবেন না, এই বয়সে এতটা ভার নিতে পারবে না। গণভবন এদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে। টিভি স্টার হয়ে গেলে ফেইম সিকিং প্রবনতা চলে আসতে পারে।
ওদেরকে পকেটে ১০ টাকা না ভরে পেছনে ১৫ টাকা ইনভেস্ট করুন। রেসিডেন্সি উন্নত করুন, খাবারের মান বাড়ান। স্থায়ীভাবে মেন্টাল স্ট্রেন্থ ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দিন, রাখুন ট্যাক্টিকাল এনালাইজার।
আজকে ৫০ লাখ টাকার ফ্লাট না দিয়ে যদি এই ইনভেস্টগুলো করতে পারেন, ৪ বছর পর বিদেশী লীগ খেলে তারা ৪ কোটি টাকার এপার্টমেন্ট নিজেরাই কিনতে পারবে।
ভারত কীভাবে একজন যুবা কোহলীকে গ্রেট কোহলী করেছে সেই রোড ম্যাপটাই ফলো করুন প্লিজ।
দেশের এই যুবাদের হাত ধরে পথ দেখুক দেশের ক্রিকেট।
ওদের জন্য প্রার্থনা ও ভালোবাস !
লেখা: জয়নাল আবেদীন
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।
৬ ফুট ৫ ইঞ্চি দেহের অধিকারী একজন ক্রিকেটারকে সতীর্থরা মজা করে ডাকতো এই নামটা! আরও সহজ করে দিলে একজন বোলারকে ডাকা হতো এই নামটা ধরে! তবে, যেমন তেমন বোলার নয় ; ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন বোলার। যার বোলিং ছিলো বৈচিত্রে ভরপুর! টানা বল করে যেতে পারতেন একই ভাবে, ক্লান্তিহীন দেহে! নিখুঁত লাইন আর লেন্থে! তার এই নিখুঁত লাইন লেন্থ ছিলো, তখনকার ব্যাটসম্যানদের এক আতংকের নাম! সাথে তো দুই দিকেই বল সুইং করানোর ক্ষমতা তো ছিলোই। তবে ছিলো না, অতিরিক্ত গতি ; তবে তার মধ্যম গতির মাঝেও ব্যাটসম্যানদের কম্পন সৃষ্টি হয়ে যেতো!
ছবি : সংগৃহীত
এতোক্ষনে নিশ্চয় বুঝে গেছেন, কার কথা বলছি? হ্যাঁ! বলছিলাম, গ্লেন ডোনাল্ড ম্যাকগ্রার কথাই। সাবেক অজি পেসার ম্যাকগ্রাকে ডাকা হতো পিজিয়ন নামে।। এর কারন ছিলো তার চিকন পা।। এই ডাক নাম দিয়েছিলো তার নিউ সাউথ ওয়েলস সতীর্থ ব্রাড ম্যাকনামারা।।
ছবি : সংগৃহীত
যার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু বলার নেই – এক কথায় অসাধারণ! ১২ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার ক্রিকেটের অন্যন্য এক সৌন্দর্যের প্রতীক! ক্যারিয়ারটাই দেখুন –
★ ১২৪ টেস্ট ম্যাচে উইকেট সংখ্যা ৫৬৩!
যা আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে পেসারদের মাঝে ২য় সর্বোচ্চ উইকেট!
★ ২৫০ ওয়ানডে ম্যাচে উইকেট সংখ্যা ৩৮১! যা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট।
ইকোনমি মাত্র ৩.৮৮! যা তাকে আলাদা করে চেনায়।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেয়া বোলারদের মাঝে তার ইকোনমি ২য় সর্বনিম্ন!
★ ক্যারিয়ারে খেলেছেন মাত্র ২ টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, তাতে উইকেট সংখ্যা ৫।
★ ক্যারিয়ারে খেলা ৪ বিশ্বকাপ আসরের (১৯৯৬,১৯৯৯,২০০৩,২০০৭) প্রতিবারই খেলেছেন ফাইনালে। আর চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ৩ বার!
★ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৪ বার অংশ নিয়ে ম্যাকগ্রার শিকার ৭১ উইকেট! যা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী করে রেখেছে তাকে।
ছবি : সংগৃহীত
ক্রিকেটার হিসেবে কিংবদন্তির কাতারে থাকা ম্যাকগ্রা মানুষ হিসেবেও যে কিংবদন্তি সমতুল্য, তা বলার আক্ষেপ রাখেনা! ১৯৯৫ সালে জেন স্টিলের সাথে পরিচয়, অতঃপর মঞ্চায়ন হয় এক রুপকথা! ১৯৯৭ সালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন প্রেমিকা জেন! তখন জেন, ম্যাকগ্রাকে তার ক্যারিয়ার থেকে সরে যেতে বললেও পিছু হটেননি ম্যাকগ্রা! ১৯৯৯ সালে তারা বিবাহ বান্ধনে আবদ্ধ হন। আর তাতেই জয় হয় ভালোবাসার! তবে ২০০৮ সালে ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়ে স্ত্রী পরলোক গমন করলে ২০০৯ সালে বিশ্বকে ক্যান্সার নিয়ে সচেতন করতে গড়ে তুলেন – ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশন! সেই ২০০৯ সাল থেকে এরপর প্রতি বছর হয়ে আসছে ‘গোলাপি টেস্ট’! স্তন ক্যান্সারের সচেতনতা বাড়াতে ও দাতব্য সংগ্রহে কাজ করে। এই টেস্টের একদিন পালন করা হয় ‘জেন ম্যাকগ্রা’ নামে।
আর এভাবেই ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন মানবিকতার দূত। গ্লেন ম্যাকগ্রা নামের অদ্ভুত এক পেসার ক্রিকেট হয়ে জীবনে মিশে গিয়ে হয়ে ওঠেন অসাধারণ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাত্র ১টি অর্ধশত পূর্নকরা ম্যাকগ্রা এবার হাকালেন তার ২য় অর্ধশত! তবে তা ২২ গজে নয় ; জীবন মঞ্চে! আজ এই অসাধারণ মানুষটারই ৫০ তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন দ্য পিজিয়ন গ্লেন ম্যাকগ্রা!
লেখা : এস, এম তৌহিদ এলাহী
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।
পৃথিবীর চতুর্থ ধনী ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশ ক্রিকেটবোর্ড। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা , ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেটে বোর্ডের পর ধনী ক্রিকেট বোর্ড হল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড,মোট সম্পদের পরিমাণ ৫২ মিলিয়ন ডলার। ইউনিলিভার বাংলাদেশ, কাতার ইয়ারওয়েজ, প্রাণ আর এফ এল গ্রুপ, প্যান প্যাসিফিক হোটেল এবং রিসোর্টস প্রধান স্পন্সর হিসেবে বিসিবিকে ব্যাপক অর্থের যোগান দিয়ে থাকে।
সাকিব, তামিম, মুশফিক , মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহ, মুস্তাফিজ ওরা ১১ জন সহ সমগ্র বাংলার ক্রিকেটাররা ১১ দফা দাবী নিয়ে ধর্মঘটের ডাকে দিয়েছে সোমাবার থেকে। বিশ্বগণমাধ্যমের শিরোনাম এখন ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয়টি। ভারত, পাকিস্তান,অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসছে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয়টি। টাইগাররা ব্যাটে বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে বহুবার শিরোনাম হয়েছে বিশ্বগণমাধ্যমে কিন্তু দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম এবারের ধর্মঘট যেন আলাদাভাবে নজর কেড়েছে বিশ্ব গণমাধ্যমের ।
আলজাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদন, ছবি :সংগৃৃহীত
প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যত সময় না তাদের ১১ দফা দাবী কার্যকর হচ্ছে তত সময় ক্রিকেট সংক্রান্ত কোন বিষয়ে অংশগ্রহন করবে না তারা।
হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন, ছবি :সংগৃহীত
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এর শিরোনাম ছিল ‘ ভারত সফরের আগে ক্রিকেটারদের এই ধর্মঘটে বিসিবি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে’। আরো উল্লেখ করেছে টি-২০ ক্যাপ্টেন সাকিব সহ , মুশফিক, মাহামুদুল্লাহ প্রেস কনফারেন্স করে বয়কটের ডাক দেয়। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটাররা সহ ৫০ এর বেশী ক্রিকেটাররা অংশ নিচ্ছে ধর্মঘটে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া এর শিরোনাম , ছবি : সংগৃহীত
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া প্রথম দিন ভারত ট্যুরের সম্ভব্যতা নিয়ে প্রশ্নতুলে শিরোনাম দিয়ে সংবাদ ছাপে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় দিনের প্রতিবেদন, ছবি : সংগৃহীত
টাইমস অফ ইন্ডিয়া দ্বিতীয় দিনের প্রতিবেদনে বলছে , বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের ধর্মঘট ভারত সফরকে প্রভাবিত করবে না।
উইজডেনের শিরোনাম, ছবি :সংগৃহীত
ক্রিকেটের বিখ্যাত পোর্টাল উইজডেন ধর্মঘটের কারণে ভারত সফর নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে শিরোনাম দিয়ে ধর্মঘটের সংবাদ তুলে ধরে।
স্কাইস্পোর্টসের প্রতিবেদন, ছবি : সংগৃহীত
স্কাইস্পোর্টসের শিরোনাম ও ছিল ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের কারণে ভারত ট্যুর শঙ্কায় পড়েছে।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদন ,ছবি : সংগৃহীত
ক্রিকবাজের শিরোনাম, নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ -ভারত সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে এ বিষয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি আত্মবিশ্বাসী।
এছাড়া রয়টার্স, এফপি পাকিস্তানের দ্য ডন সহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয় প্রকাশিত হয়েছে যা বিশ্বব্যাপ্যী বিসিবি এর ইমেজ সংকটে ফেলে দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।