Connect with us

খেলাধুলা

গ্লেন ম্যাকগ্রা দ্য পিজিয়ন

Published

on

গ্লেন ম্যাকগ্রা দ্য পিজিয়ন

৬ ফুট ৫ ইঞ্চি দেহের অধিকারী একজন ক্রিকেটারকে সতীর্থরা মজা করে ডাকতো এই নামটা! আরও সহজ করে দিলে একজন বোলারকে ডাকা হতো এই নামটা ধরে! তবে, যেমন তেমন বোলার নয় ; ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন বোলার। যার বোলিং ছিলো বৈচিত্রে ভরপুর! টানা বল করে যেতে পারতেন একই ভাবে, ক্লান্তিহীন দেহে! নিখুঁত লাইন আর লেন্থে! তার এই নিখুঁত লাইন লেন্থ ছিলো, তখনকার ব্যাটসম্যানদের এক আতংকের নাম! সাথে তো দুই দিকেই বল সুইং করানোর ক্ষমতা তো ছিলোই। তবে ছিলো না, অতিরিক্ত গতি ; তবে তার মধ্যম গতির মাঝেও ব্যাটসম্যানদের কম্পন সৃষ্টি হয়ে যেতো!

গ্লেন ম্যাকগ্রা দ্য পিজিয়ন

ছবি : সংগৃহীত

এতোক্ষনে নিশ্চয় বুঝে গেছেন, কার কথা বলছি? হ্যাঁ! বলছিলাম, গ্লেন ডোনাল্ড ম্যাকগ্রার কথাই। সাবেক অজি পেসার ম্যাকগ্রাকে ডাকা হতো পিজিয়ন নামে।। এর কারন ছিলো তার চিকন পা।। এই ডাক নাম দিয়েছিলো তার নিউ সাউথ ওয়েলস সতীর্থ ব্রাড ম্যাকনামারা।।

গ্লেন ম্যাকগ্রা দ্য পিজিয়ন

ছবি : সংগৃহীত

যার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু বলার নেই – এক কথায় অসাধারণ! ১২ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটার ক্রিকেটের অন্যন্য এক সৌন্দর্যের প্রতীক! ক্যারিয়ারটাই দেখুন –

★ ১২৪ টেস্ট ম্যাচে উইকেট সংখ্যা ৫৬৩!
যা আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে পেসারদের মাঝে ২য় সর্বোচ্চ উইকেট!

★ ২৫০ ওয়ানডে ম্যাচে উইকেট সংখ্যা ৩৮১! যা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট।
ইকোনমি মাত্র ৩.৮৮! যা তাকে আলাদা করে চেনায়।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেয়া বোলারদের মাঝে তার ইকোনমি ২য় সর্বনিম্ন!

★ ক্যারিয়ারে খেলেছেন মাত্র ২ টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, তাতে উইকেট সংখ্যা ৫।

★ ক্যারিয়ারে খেলা ৪ বিশ্বকাপ আসরের (১৯৯৬,১৯৯৯,২০০৩,২০০৭) প্রতিবারই খেলেছেন ফাইনালে। আর চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ৩ বার!

★ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৪ বার অংশ নিয়ে ম্যাকগ্রার শিকার ৭১ উইকেট! যা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী করে রেখেছে তাকে।

গ্লেন ম্যাকগ্রা দ্য পিজিয়ন

ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেটার হিসেবে কিংবদন্তির কাতারে থাকা ম্যাকগ্রা মানুষ হিসেবেও যে কিংবদন্তি সমতুল্য, তা বলার আক্ষেপ রাখেনা! ১৯৯৫ সালে জেন স্টিলের সাথে পরিচয়, অতঃপর মঞ্চায়ন হয় এক রুপকথা! ১৯৯৭ সালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন প্রেমিকা জেন! তখন জেন, ম্যাকগ্রাকে তার ক্যারিয়ার থেকে সরে যেতে বললেও পিছু হটেননি ম্যাকগ্রা! ১৯৯৯ সালে তারা বিবাহ বান্ধনে আবদ্ধ হন। আর তাতেই জয় হয় ভালোবাসার! তবে ২০০৮ সালে ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়ে স্ত্রী পরলোক গমন করলে ২০০৯ সালে বিশ্বকে ক্যান্সার নিয়ে সচেতন করতে গড়ে তুলেন – ম্যাকগ্রা ফাউন্ডেশন! সেই ২০০৯ সাল থেকে এরপর প্রতি বছর হয়ে আসছে ‘গোলাপি টেস্ট’! স্তন ক্যান্সারের সচেতনতা বাড়াতে ও দাতব্য সংগ্রহে কাজ করে। এই টেস্টের একদিন পালন করা হয় ‘জেন ম্যাকগ্রা’ নামে।

আর এভাবেই ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন মানবিকতার দূত। গ্লেন ম্যাকগ্রা নামের অদ্ভুত এক পেসার ক্রিকেট হয়ে জীবনে মিশে গিয়ে হয়ে ওঠেন অসাধারণ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাত্র ১টি অর্ধশত পূর্নকরা ম্যাকগ্রা এবার হাকালেন তার ২য় অর্ধশত! তবে তা ২২ গজে নয় ; জীবন মঞ্চে! আজ এই অসাধারণ মানুষটারই ৫০ তম জন্মদিন। শুভ  জন্মদিন দ্য পিজিয়ন গ্লেন ম্যাকগ্রা!

লেখা : এস, এম তৌহিদ এলাহী

প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

খেলাধুলা

যুব চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

Published

on

যুব চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

বাংলাদেশ যুবারা জিতসে, অভিনন্দন জানান। ফুল দিন, সম্মানের সাথে ওদেরকে নিজেদের বাসায় পৌঁছিয়ে দিন।

তবে দয়া করে এখনই ফ্ল্যাট ঘোষনা কইরেন না। আকবর আলীর মা বা পারভেজ ইমনের বাবাকে গণভবনে ডাইকেন না। এদেরকে টেলিভিশন প্রোডাক্ট বানাবেন না। এদের দিয়ে এখুনি মডেলিং করানোরও দরকার নেই।এখনই ওদের কে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্টারের সাথে তুলনা কইরেন না।।ওদেরকে নিঝের পরিচয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে দিন।

যুব চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

বরং ওদেরকে আইসোলেট করুন। আইসোলেট করুন দেশের নোংরা ক্রিকেট সংস্কৃতি থেকে। ২০০৪ আন্ডার নাইন্টিনে শিখর ধাওয়ান ছিল ইন্ডিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান। ধাওয়ান জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে প্রায় অর্ধ যুগ পরে। ধাওয়ান এখনো উন্নতি করছে নিজের খেলায়, এখনো অজিদের সামনে পেলেই জ্বলে উঠছে বারবার।

সেই বিশ্বকাপের আরেকজন সুরেশ রায়না। প্রায় এক দশক দাপটের সাথে সাদা বলে খেলেছে রায়না৷ দলের বাইরে গেলেও রায়না এখনো আইপিএলের অন্যতম হট কেক।

যুব চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট

একই বিশ্বকাপে আমাদের স্টার ছিল নাফিস ইকবাল। নাফিস ইকবালের লাস্ট যে খবর শুনেছিলাম, আইপিএল এ ফিজের দু ভাষি হিসেবে কাজ করতে নাকি ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন দুই বছর আগে। আহারে আইপিএল!.

আরেকজন আফতাব আহমেদ। অনেক আগে কোন ছিনতাইকারী হারিকেন দিয়ে বাড়ি মেরে তার মুখ ভচকায়া দিয়েছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছিল। এখন নাকি টুকটাক কোচিং করাচ্ছেন।

এহসানুল হক সেজান,আল শাহরিয়ার রোকনের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে?অনেক সম্ভাবনা নিয়ে এসেও মনে রাখার মতো কিছুই করতে পারেন নি তারা।।

নাঈম ইসলাম টিকে আছেন এখনো না থাকার মতো করেই। এবার তো বিপিএলও তাকে দেখা গেল না। ক্যারিয়ার সম্ভবত শেষ।

অনূর্ধ্ব ১৯ স্টার এনামুল, কোনো কাজে লাগল না। স্টার লিটন দাস দু তিনটা চার মেরেই কাজ শেষ মনে করে(যদিও ভালো করার যথেষ্ট সম্ভাবনা তার আছে)৷ শান্ত থেকে এখনো কিছু পাওয়া গেল না। মিস ডিরেকশনে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হওয়া মিরাজ দলের বাইরে।মুস্তাফিজ আর রাবাদার অভিষেক কয়েক মাস আগে পরে।।শুরুতে ফিজকে অনেক বেশি সম্ভাবনাময় মনে হলেও এখন সে রাবাদার চাইতে অনেক পিছিয়ে।।
তবে যুব দল থেকে নিজেদের ক্যারিয়ারকে ভালো অবস্থায় কেউ নিতে পারেন নি এমন নয়।। এদের সংখ্যাটা কম।।মুশফিক,সাকিব,তামিম জ্বলন্ত উদাহরন।।

তাই,প্লিজ এই যুব দলটাকে হারাতে দিয়েন না।

এই দল যে বহু সাধনার ফসল সেটা বিদেশী ধারাভাষ্যকাররাও বারবার বলছিল। দু বছরে অনেক শ্রম দিয়ে এদেরকে তৈরি করা হয়েছে। প্লিজ এদের কেয়ার নিন।

ফ্লাট দিয়ে এখুনি অতি বিত্তবান বানাবেন না, এই বয়সে এতটা ভার নিতে পারবে না। গণভবন এদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে। টিভি স্টার হয়ে গেলে ফেইম সিকিং প্রবনতা চলে আসতে পারে।

ওদেরকে পকেটে ১০ টাকা না ভরে পেছনে ১৫ টাকা ইনভেস্ট করুন। রেসিডেন্সি উন্নত করুন, খাবারের মান বাড়ান। স্থায়ীভাবে মেন্টাল স্ট্রেন্থ ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দিন, রাখুন ট্যাক্টিকাল এনালাইজার।

আজকে ৫০ লাখ টাকার ফ্লাট না দিয়ে যদি এই ইনভেস্টগুলো করতে পারেন, ৪ বছর পর বিদেশী লীগ খেলে তারা ৪ কোটি টাকার এপার্টমেন্ট নিজেরাই কিনতে পারবে।
ভারত কীভাবে একজন যুবা কোহলীকে গ্রেট কোহলী করেছে সেই রোড ম্যাপটাই ফলো করুন প্লিজ।

দেশের এই যুবাদের হাত ধরে পথ দেখুক দেশের ক্রিকেট।

ওদের জন্য প্রার্থনা ও ভালোবাস !

লেখা: জয়নাল আবেদীন

 

প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

Continue Reading

খেলাধুলা

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট

Published

on

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট

পৃথিবীর চতুর্থ ধনী ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশ ক্রিকেটবোর্ড। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা , ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেটে বোর্ডের পর ধনী ক্রিকেট বোর্ড হল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড,মোট সম্পদের পরিমাণ ৫২ মিলিয়ন ডলার। ইউনিলিভার বাংলাদেশ, কাতার ইয়ারওয়েজ, প্রাণ আর এফ এল গ্রুপ, প্যান প্যাসিফিক হোটেল এবং রিসোর্টস প্রধান স্পন্সর হিসেবে বিসিবিকে ব্যাপক অর্থের যোগান দিয়ে থাকে।

সাকিব, তামিম, মুশফিক , মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহ, মুস্তাফিজ ওরা ১১ জন সহ সমগ্র বাংলার ক্রিকেটাররা ১১ দফা দাবী নিয়ে ধর্মঘটের ডাকে দিয়েছে সোমাবার থেকে। বিশ্বগণমাধ্যমের শিরোনাম এখন ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয়টি। ভারত, পাকিস্তান,অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসছে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয়টি। টাইগাররা ব্যাটে বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে বহুবার শিরোনাম হয়েছে বিশ্বগণমাধ্যমে কিন্তু দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম এবারের ধর্মঘট যেন আলাদাভাবে নজর কেড়েছে বিশ্ব গণমাধ্যমের ।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
আলজাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদন, ছবি :সংগৃৃহীত

প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যত সময় না তাদের ১১ দফা দাবী কার্যকর হচ্ছে তত সময় ক্রিকেট সংক্রান্ত কোন বিষয়ে অংশগ্রহন করবে না তারা।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন, ছবি :সংগৃহীত

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এর শিরোনাম ছিল ‘ ভারত সফরের আগে ক্রিকেটারদের এই ধর্মঘটে বিসিবি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে’। আরো উল্লেখ করেছে টি-২০ ক্যাপ্টেন সাকিব সহ , মুশফিক, মাহামুদুল্লাহ প্রেস কনফারেন্স করে বয়কটের ডাক দেয়। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটাররা সহ ৫০ এর বেশী ক্রিকেটাররা অংশ নিচ্ছে ধর্মঘটে।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
টাইমস অফ ইন্ডিয়া এর শিরোনাম , ছবি : সংগৃহীত

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া প্রথম দিন ভারত ট্যুরের সম্ভব্যতা নিয়ে প্রশ্নতুলে শিরোনাম দিয়ে সংবাদ ছাপে।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় দিনের প্রতিবেদন, ছবি : সংগৃহীত

টাইমস অফ ইন্ডিয়া দ্বিতীয় দিনের প্রতিবেদনে বলছে , বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের ধর্মঘট ভারত সফরকে প্রভাবিত করবে না।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
উইজডেনের শিরোনাম, ছবি :সংগৃহীত

ক্রিকেটের বিখ্যাত পোর্টাল উইজডেন ধর্মঘটের কারণে ভারত সফর নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে শিরোনাম দিয়ে ধর্মঘটের সংবাদ তুলে ধরে।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
স্কাইস্পোর্টসের প্রতিবেদন, ছবি : সংগৃহীত

স্কাইস্পোর্টসের শিরোনাম ও ছিল ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের কারণে ভারত ট্যুর শঙ্কায় পড়েছে।

বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ধর্মঘট
ক্রিকবাজের প্রতিবেদন ,ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকবাজের শিরোনাম, নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ -ভারত সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে এ বিষয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি আত্মবিশ্বাসী।

এছাড়া রয়টার্স, এফপি পাকিস্তানের দ্য ডন সহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটের বিষয় প্রকাশিত হয়েছে যা বিশ্বব্যাপ্যী বিসিবি এর ইমেজ সংকটে ফেলে দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

Continue Reading

খেলাধুলা

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম

Published

on

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম


প্রিন্স হ্যারী এবং প্রিন্স উইলিয়াম তো বিট্রিশদের রাজপুত্র কিন্তু  ফুটবলের মাঠেও ব্রিটিশদের একজন এক রাজপুত্র ছিল । হ্যা ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ডেভিট বেকহ্যাম,সুদর্শন ফুটবলার,ফ্রি কিক স্পেশালিস্ট এবং ফ্যাশান আইকন হিসেবে যার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী।

ফুটবলের অন্যতম সুদর্শন এই  অসাধারণ সব ফ্রিকিকের কারণে বলা হতো ফুটবল ফ্রি-কিকের আইকন।

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম
ছবি র:সংগৃহীত


‘রবার্তো কার্লোস বলেন “যখন আমি ও সে একই টিমে খেলতাম তখন কোন ফ্রি-কিক হলে আমি তাকে মারতে বলতাম কারণ তার ফ্রি-কিক আমার খুবই প্রিয়।”

স্কুল জীবনে এক শিক্ষক তাকে প্রশ্ন করে ” তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও। সে উত্তরে বলেছিলো একজন ফুটবলার।” শিক্ষক আবার জিগ্যেস করলো”না, তুমি আাসলে তোমার হিসেবে কি হতে চাও।” ‘সে বলেছিলো ” আমি সবসময় ফুটবলার হতে চাই”।


ইংলিশ ফুটবল নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে গেলে শুরুতেই চলে আসে ডেভিড বেকহামের নাম। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডর হয়ে খেলা শুরু করেন। এই বয়সে খেলার জন্য তিনি পড়া লেখা বন্ধ করে দেন। অন্যদিকে  ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল এই মানুষটি (Obsessive Compulsive Disorder-OCD) নামক এক অদ্ভুত রোগে আক্রান্ত ছিল । যার কারনে তিনি কোনো কিছু পারফেক্ট না হওয়া  পর্যন্ত স্থির হতে পারতেন না

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম
ছবি :সংগৃহীত


বেকহামের পুরোনাম “ডেভিড রবার্ট জোসেফ বেকহাম”। বেকহাম ১৯৭৫ সালে ২ ই মে লন্ডনের লেইনস্টন অঞ্চলের ‘হুইপস ক্রস ইউনিভারসিটি হসপিটালে” জন্মগ্রহণ করেন।
বেকহামের বাবা ‘ডেবিট এডওয়ার্ড অ্যালান বেকহাম’। ডাকনাম “টেড”। টেড ছিলেন একজন মিস্ত্রি। বেকহামের মা “সান্ড্রা জর্জিনা” ছিলেন একজন হেয়ার ড্রেসার”। টেড ও সান্ড্রার দ্বিতীয় সন্তান বেকহাম।এছাড়া বেকহামের দুই বোন লিন জর্জিনা ও জোয়ান লুইস’। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মডেল ‘ভিক্টরি এডামসের’ সাথে দীর্ঘ সম্পর্কে ছিলেন। পরবর্তীতে তারা ১৯৯৯ সালে বিয়ে করেন। বর্তমানে তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা । খেলাধুলার পাশাপাশি তিনি মডেলের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং কয়েকটি সিনেমায় ক্ষণস্থায়ী ভাবে অভিনয় করেছেন। তার অভিনিত সিনেমাগুলো- ২০০২ সালে ‘Bend it like beckham”  সিনেমায় বেকহাম নিজে অভিনয় করেন আর ব্যস্ততার জন্য তার মত দেখতে ‘অ্যান্ডি হার্মার” অভিনয় করেন। তার প্রনীত আরো সিনেমা। “Goal!, Goal !!:living the dream, Goal !!!:taking on the world, এবং 2017 সালে  ‘king Arthur: legend of the sword. এছাড়াও তিনি বিভিন্ন রিয়েলিটি শো করেছন।


বেকহামের লেখাপড়া শুরু হয় চেস্টলেন প্রাইমারি স্কুল থেকে।তারপর তিনি চলে যান ‘চিংফোর্ড কাউন্টি হাইস্কুলে’। তবে লেখাপড়ার চেয়ে ফুটবল তাকে বেশিই টানতো। বাচ্চা ছেলের বাঁকানো শট দেখে প্রতিবেশিরা প্রশংসা ভাসাতো। মাত্র এগারো বছর বয়সে ‘চাল্টন সোসাল স্কুলস ন্যাশনাল স্কিলার প্রতিযোগিতায় সবার নজর কাড়ে। তিনি স্কুল জীবনে ‘রিডগেওয়ে রোভার্স নামক একটি দলে খেলতেন। এছাড়াও নরউইন সিটি,লেটন ওরিয়েন্ট,টটেনহাম হটস্পটের মত টিমে ট্রায়াল দিয়েছেন। এত কম বয়সে এত প্রতিভা সবার নজড় কাড়ে।

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম
রিয়ালের জার্সিতে বেকহাম


বেকহামের জীবন পুরোপুরি বদলে যায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে। এত কম বয়সে বিখ্যাত  “ক্লাস অফ ‘৯২’ ” ইউুথ প্লেয়ারের অংশ হন। এছাড়াও তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর ইউুথ টিমে অংশ নেন। যার ফলোস্রুতিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জুনিয়র টিমে অংশ পান। খেলাধুলার প্রতি এতটাই ঝুক ছিল যে পড়াশোনার পাঠ একেবারেই চুকিয়ে ফেলেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম সেশন তার খুব একটা ভালো কাটেনি। তবে সুদর্শন খেলোয়ারের সুদর্শন খেলা শুরু হয় ঠিক তার পরের সেশনে।সেই সেশনে  F.A Cup জিতিয়ে ম্যান ইউ এর ম্যানেজারের আস্থা রাখে। এবং টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়ার হয়। ৯০ দশকের শেষের দিকে সুদর্শনের আরো ফুটে ওঠে এবং হয়ে যায় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৯৯ সালের এক সেশনে তার ক্লবকে উপহার দেন premium league,FA cup,Champion league এর ট্রেবল জয়। এবং সেবছর তিনি world best player হিসেবে রানার্স আপ হন। সব মিলিয়ে তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ৮ বছর সফলি বলতে হবে। এই ৮ বছরে তিনি তার ক্লাবকে 5 premium league,1champion league, 2 FA cup উপহার দেন। এবং গোল করেন ২৬২ টি ম্যাচে।

বেকহাম ১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে ফ্রান্স বিশ্বকাপ খেলে।সেই বিশ্বকাপে ২য় রাউন্ড থেকে বাদ পড়েন। বাদ পরার ফলে সবাই বেকহামক ফুরিয়ে গেছে বলে মনে করেন।কিন্তু তিনি ২০০০ সালে গ্রীসের সাথে দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক করে দলকে জিতিয়ে দেন এবং বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নপুরন করেন। পরের বিশ্বকাপে তিনি ক্যাপ্টেনের দায়িত্বপান।

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম
ফুটবল ক্যারিয়ার, ছবি :সংগৃহীত

কিন্তু মুকুটহীন এই রাজার ভাগ্যে বিশ্বকাপ ছুয়ে দেখা হলো না। তিনি ২০০০ সালে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করে। এবং সেখানে ৪ বছর দুর্দান্ত সময় কাটান।২০০৬ সালে নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলেন।এবং দলকে কোয়াটার ফাইনালে নিয়ে যান। ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের জার্সিতে তিনি ১১৭ ম্যাচ খেলে ১৭ টি গোল করেন। পরে লা-গ্যালাক্সি, পিএসজি,ও ইন্টার মিলানে খেলেন।২০১৩ সালে ইন্টার মিলানে খেলাকালিন এই ফুটবলের সুদর্শন পুরুষ সব ধরনের খেলা থেকে বিদায় জানান। তার বিদায়ে পুরো ফুটবল বিশ্ব ফুটবল জগতের এক নক্ষত্রের হারানোর ব্যাথায় ব্যাথিত হন।

ফুটবলের ব্রিটিশ রাজপুত্র ও ফ্রি-কিক আইকন : ডেভিড বেকহাম
২০১২ লন্ডন অলিম্পিকের মশাল হাতে বেকহ্যাম , ছবি : সংগৃহীত



ফুটবল ছাড়ার আগে তার ক্যারিয়ারের ঝুলি কিছু রেকর্ড  আছে। তিনি ইংল্যান্ডের দীর্ঘ মেয়াদী অধিনায়ক। ইংল্যান্ডের হৈ তিনি ৫৮ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন। ২০০৬ সালে বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ফ্রি-কিকে গোল দেয়ার সুবাদে দুইটি একচেটিয়া ক্লাবের সদস্য হবার গৌরব অর্জন করেন।  একমাত্র  ইংরেজ এবং যে কোনো জাতীয়তায় একুশতম প্লেয়ার যিনি তিনটি বিশ্বকাপের গোল করেন। এবং বিশ্বকাপ ইতিহাসে পঞ্চম খেলোয়ার হিসেবে যিনি দুইটি ফ্রি-কিকে গোল দেয়ার মালিক। আর বাকি চার জন হলো পেলে, কিউবিলাস, বার্নাড ও রিভেলিনো।
 শুরু থেকে অবসর পর্যন্ত তিনি ৫২৩ ম্যাচে ৯৭ গোল ও ২৮৩ টি অ্যসিস্ট এর মালিক।


তিনি খেলোয়ার হিসেবে যতটা জনপ্রিয় ততটাই তিনি তার শরীরের ট্যাটুর জন্য জনপ্রিয়। তার শরীরে ৫০ টির বেশী ট্যাটু আছে। বেকাহাম খেলার পাশাপাশি মডেলের সাথে যুক্ত ছিলেন।
 
বেকহামের স্ত্রী বলেন ” আমি তাকে ফুটবলারের চেয়ে মডেল হিসেবে বেশী পছন্দ করি।”

 মানুষ বিশ্বকাপ না জেতা ফুটবল রাজাদের বেশী একটা মনে রাখে না। তেমনি একজন মুকুট বিহিন রাজা ফ্রি-কিক লাভারদের আইকন, ডেভিড বেকহাম।

লেখক : এনামুল হাসান টমাস

তথ্যসূত্র :

https://www.sportskeeda.com

https://www.theguardian.com

https://starsunfolded.com

https://lifebogger.com

প্রকাশিত সকল লেখার দায়ভার লেখকের। আমরা লেখকের চিন্তা ও মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখার সঙ্গে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল তাই সব সময় নাও থাকতে পারে।

Continue Reading

সর্বাধিক পঠিত