বাংলাদেশ যুবারা জিতসে, অভিনন্দন জানান। ফুল দিন, সম্মানের সাথে ওদেরকে নিজেদের বাসায় পৌঁছিয়ে দিন।
তবে দয়া করে এখনই ফ্ল্যাট ঘোষনা কইরেন না। আকবর আলীর মা বা পারভেজ ইমনের বাবাকে গণভবনে ডাইকেন না। এদেরকে টেলিভিশন প্রোডাক্ট বানাবেন না। এদের দিয়ে এখুনি মডেলিং করানোরও দরকার নেই।এখনই ওদের কে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্টারের সাথে তুলনা কইরেন না।।ওদেরকে নিঝের পরিচয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে দিন।

বরং ওদেরকে আইসোলেট করুন। আইসোলেট করুন দেশের নোংরা ক্রিকেট সংস্কৃতি থেকে। ২০০৪ আন্ডার নাইন্টিনে শিখর ধাওয়ান ছিল ইন্ডিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান। ধাওয়ান জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে প্রায় অর্ধ যুগ পরে। ধাওয়ান এখনো উন্নতি করছে নিজের খেলায়, এখনো অজিদের সামনে পেলেই জ্বলে উঠছে বারবার।
সেই বিশ্বকাপের আরেকজন সুরেশ রায়না। প্রায় এক দশক দাপটের সাথে সাদা বলে খেলেছে রায়না৷ দলের বাইরে গেলেও রায়না এখনো আইপিএলের অন্যতম হট কেক।

একই বিশ্বকাপে আমাদের স্টার ছিল নাফিস ইকবাল। নাফিস ইকবালের লাস্ট যে খবর শুনেছিলাম, আইপিএল এ ফিজের দু ভাষি হিসেবে কাজ করতে নাকি ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন দুই বছর আগে। আহারে আইপিএল!.
আরেকজন আফতাব আহমেদ। অনেক আগে কোন ছিনতাইকারী হারিকেন দিয়ে বাড়ি মেরে তার মুখ ভচকায়া দিয়েছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছিল। এখন নাকি টুকটাক কোচিং করাচ্ছেন।
এহসানুল হক সেজান,আল শাহরিয়ার রোকনের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে?অনেক সম্ভাবনা নিয়ে এসেও মনে রাখার মতো কিছুই করতে পারেন নি তারা।।
নাঈম ইসলাম টিকে আছেন এখনো না থাকার মতো করেই। এবার তো বিপিএলও তাকে দেখা গেল না। ক্যারিয়ার সম্ভবত শেষ।
অনূর্ধ্ব ১৯ স্টার এনামুল, কোনো কাজে লাগল না। স্টার লিটন দাস দু তিনটা চার মেরেই কাজ শেষ মনে করে(যদিও ভালো করার যথেষ্ট সম্ভাবনা তার আছে)৷ শান্ত থেকে এখনো কিছু পাওয়া গেল না। মিস ডিরেকশনে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হওয়া মিরাজ দলের বাইরে।মুস্তাফিজ আর রাবাদার অভিষেক কয়েক মাস আগে পরে।।শুরুতে ফিজকে অনেক বেশি সম্ভাবনাময় মনে হলেও এখন সে রাবাদার চাইতে অনেক পিছিয়ে।।
তবে যুব দল থেকে নিজেদের ক্যারিয়ারকে ভালো অবস্থায় কেউ নিতে পারেন নি এমন নয়।। এদের সংখ্যাটা কম।।মুশফিক,সাকিব,তামিম জ্বলন্ত উদাহরন।।
তাই,প্লিজ এই যুব দলটাকে হারাতে দিয়েন না।
এই দল যে বহু সাধনার ফসল সেটা বিদেশী ধারাভাষ্যকাররাও বারবার বলছিল। দু বছরে অনেক শ্রম দিয়ে এদেরকে তৈরি করা হয়েছে। প্লিজ এদের কেয়ার নিন।
ফ্লাট দিয়ে এখুনি অতি বিত্তবান বানাবেন না, এই বয়সে এতটা ভার নিতে পারবে না। গণভবন এদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে। টিভি স্টার হয়ে গেলে ফেইম সিকিং প্রবনতা চলে আসতে পারে।
ওদেরকে পকেটে ১০ টাকা না ভরে পেছনে ১৫ টাকা ইনভেস্ট করুন। রেসিডেন্সি উন্নত করুন, খাবারের মান বাড়ান। স্থায়ীভাবে মেন্টাল স্ট্রেন্থ ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দিন, রাখুন ট্যাক্টিকাল এনালাইজার।
আজকে ৫০ লাখ টাকার ফ্লাট না দিয়ে যদি এই ইনভেস্টগুলো করতে পারেন, ৪ বছর পর বিদেশী লীগ খেলে তারা ৪ কোটি টাকার এপার্টমেন্ট নিজেরাই কিনতে পারবে।
ভারত কীভাবে একজন যুবা কোহলীকে গ্রেট কোহলী করেছে সেই রোড ম্যাপটাই ফলো করুন প্লিজ।
দেশের এই যুবাদের হাত ধরে পথ দেখুক দেশের ক্রিকেট।
ওদের জন্য প্রার্থনা ও ভালোবাস !
লেখা: জয়নাল আবেদীন